উমরি মসজিদ নামে পরিচিত (المسجد العمري) গাজা ভূখন্ডের বৃহত্তম এবং প্রাচীনতম মসজিদ যা গাজার পুরানো শহর আল দারাজ-এ অবস্থিত। এই মসজিদকে গাজার বড় মসজিদ (جامع غزة الكبير) বলেও ডাকা হয়।
মসজিদটি ৬৫০ বছরেরও পূর্বে নির্মাণ করা হয়। ৭ম শতাব্দীতে মুসলমানরা জেরুজালেম বিজয়ের পর মসজিদটি নির্মাণ করেন। যার নিম্ন অর্ধাংশ বর্গ আকৃতির এবং ঊর্ধ্ব অর্ধাংশ অষ্টভুজাকৃতির, যা মামলুক স্থাপত্য শৈলী দ্বারা নির্মিত হয়েছে। মসজিদটি ৪,১০০ বর্গ মিটারের একটি এলাকা জুড়ে অবস্থিত। সাধারনত অধিকাংশ কাঠামো স্থানীয়ভাবে পরিচিত সামুদ্রিক বেলেপাথর কুরকার থেকে নির্মিত হয়। মসজিদের বৃহৎ আঙ্গিনাটি বৃত্তাকার খিলান দ্বারা বেষ্টিত। মামলুক এবং পরবর্তীতে উসমানীয়রা ভবনের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে সম্প্রসারিত করেছে।
মসজিদের দরজার উপর মামলুক সুলতান কালাওনের নামাঙ্কিত একটি শিলালিপি এবং সুলতান মালিকুল মানসুর হুসামুদ্দিন লাজিন-এর নাম সংবলিত শিলালিপি আছে।
ইসলামী সভ্যতার ঐতিহাসিক এই মসজিদটির মিনার ১০৩৩ সালে একটি ভূমিকম্পের কারণে প্রথমবারের মতো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর ১১৪৯ সালে ক্রুসেডাররা জেরুজালেম দখল করলে, মসজিদটিকে গির্জায় রূপান্তর করে। পরবর্তীতে সালাউদ্দিন আইয়ুবী জেরুজালেম পুনরুদ্ধার করলে তা আবার মসজিদে রূপান্তর করেন এরপর ১৩শ শতাব্দীর শুরুর দিকে মামলুকরা মসজিদটির পুনঃনির্মাণ করেন। ১২৬০ সালে মসজিদটি মঙ্গোলদের হাতে হাল্কা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তবে শীঘ্রই মসজিদটি পুনঃস্থাপন করা হয়। কিন্তু ১৩শ শতাব্দীর শেষের দিকে এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে মসজিদটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। এর প্রায় ৩০০ বছর পরে উসমানীয়রা মসজিদটি পুনঃনির্মাণ করে। পরবর্তীতে ১ম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ গোলাবর্ষণের পর মসজিদটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা সুপ্রিম মুসলিম কাউন্সিল ১৯২৫ সালে সংস্কার করে। এরপর আজ দখলদার ইসরায়েলের বোমা বর্ষণের ফলে পুনরায় মসজিদটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলো।
সংকলক: মু. শফিকুল ইসলাম