মুসলিম পোর্ট

এই মুহূর্তে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র জায়নবাদী ইসরায়েলের সাথে মুসলিম দেশগুলোর যাবতীয় সম্পর্কচ্ছেদই সবচেয়ে বড় জিহাদ। বিশেষত সৌর প্রযুক্তি, গ্যাস এবং তেলের রপ্তানি বন্ধ করে দিলে দখলদার ইসরায়েল অচিরেই কালের গহ্বরের হারিয়ে যাবে। অথচ এই অবস্থায়ও মুসলিম প্রধান দেশ গুলো ইজরায়েলের প্রতি তাদের সব ধরনের কুটনৈতিক সম্পর্ক সর্বোচ্চ জোরদার করে গাজার জঘন্য  গণহত্যায় প্রত্যক্ষ সহায়তা করে যাচ্ছে।

(ইনফোগ্রাফ চিত্রে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।)

তুরস্ক:

মুসলিম উম্মাহর আস্থা অর্জন করা সত্যেও এরদোয়ান সরকার বর্ণবাদী দখলদার ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক জোরদার করে যাচ্ছে। লোহা, সিরামিক্স, নির্মাণ উপাদান, খাদ্য সামগ্রী, বিদ্যুৎ ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, সিমেন্ট, কাচামাল ও বিভিন্ন ধাতববস্তু ছাড়া ভারী যানবাহন রপ্তানি এমনকি আকাশযান আদানপ্রদানের মাধ্যমেও দখলদার দেশটির সাথে সম্পর্ক বজায় রেখেছে তুরস্ক। এছাড়া ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় রাডারও (আকাশ নিরাপত্তা) তুরস্কে অবস্থিত।

পরিসংখ্যান বলছে, গোটা ইসরায়েলের প্রয়োজনীয় লোহা ও সিরামিক্সের ৩ ভাগের ১ ভাগই আসে তুরস্ক থেকে। শুধু তাই নয়, ২০২২ সালে ইসরায়েলের সাথে তুরস্কের ব্যাবসায়িক লেনদেন হয়েছে ৫.৭ বিলিয়ন ডলার।  এমনকি ইসরায়েল ওদের মোট আমদানির ৬.২ শতাংশই সম্পাদন করে তুরস্ক থেকে। 

গতবছর ইসরায়েলে প্রধান পন্য রপ্তানিকারক দেশের দৌড়ে ৫ম তুরস্ক। 

সংযুক্ত আরব আমিরাত:

দখলদার ইসরায়েলের সাথে আরবদেশ গুলোর মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সখ্যতা সবচেয়ে বেশি। সাইবার নিরাপত্তা, কৃষি প্রযুক্তি, বাণিজ্যিক প্রযুক্তি ও নানামুখী উন্নয়ন প্রকল্প ছাড়াও মহাকাশযান, ওষুধ, বিদ্যুৎ, শিল্পকারখানা ও পানি সরবরাহ করে দখলদার সন্ত্রাসী ইসরাইলের বন্ধুতে পরিণত হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।  

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২০ ও ২১ সালে আরব আমিরাত দখলদার ইসরাইলকে ৬৩২ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। এরপর শুধুমাত্র ২০২২ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরাইলের মধ্যকার বাণিজ্য পৌঁছায় ২.৫৬ বিলিয়ন ডলারে। যার ফলে ২০২২ সালে ইসরায়েলকে পণ্য রপ্তানিকারক দেশের তালিকায় সংযুক্ত আরব আমিরাত ৭ম স্থানে উঠে আসে।  

মজার ব্যাপার হলো- দু’দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক আরো জোরদার করার স্বার্থে সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত ইসরাইলকে ১০ বিলিয়ন ডলার প্রদান করে এইজন্য যে, নেতানিয়াহু যেন সন্ত্রাসী রাষ্ট্রটির 

 অবকাঠামগত উন্নয়নে এসকল অর্থ ব্যয় করতে পারে। 

মিশর: 

ফিলিস্তিনের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র  মিশরের সাথেও ইসরাইলের সখ্যতা কম নয়। ইসরাইলের সাথে দেশটির  

বাৎসরিক গড় লেনদেনের পরিমাণ ২৭০ মিলিয়ন ডলার।  ইসরাইলে মিশরের বাৎসরিক রপ্তানির পরিমাণও ১১৫ মিলিয়ন ডলার। 

জর্ডান:

জর্ডানের সাথে দখলদার ইসরাইলের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ খাতে।  পরিসংখ্যানে দেখা যায় এই তিন খাতে এর পরিমাণ ৫৩০ মিলিয়ন ডলার। 

বাহরাইন:

সংযুক্ত আরব আমিরাতের পর আরব দেশসমূহের মধ্য থেকে ইজরায়েলের অন্যতম কাছের দেশ বাহরাইন।  ইসরাইলে খরিদ সম্পদ ও জ্বালানি রপ্তানিতে বাহরাইন। এছাড়াও বিগত উন্নয়ন, উদ্ভাবন এবং গবেষণায়ও বাহরাইনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।  

পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালে দখলদার ইসরাইল বাহরাইনের মধ্যে ৭.৫ মিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়িক লেনদেন হয়েছে।  সন্ত্রাসী রাষ্ট্রটিতে বাহরাইনের বাৎসরিক রপ্তানির পরিমাণও ৩.৫ মিলিয়ন ডলার। 

আজারবাইজান ও কাজিকিস্তান:

চলতি বছরের গত মে থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত এই দুই দেশ সম্মিলিতভাবে ইসরাইলকে তেল প্রদান করেছে ২২০,০০০ ব্যারেল। এমনকি ইসরাইলের আমদানিকৃত তেলের ৬০ শতাংশই আসে এই দুই দেশ থেকে।

 

ডেস্ক রিপোর্ট, মুসলিম পোর্ট