মুসলিম পোর্ট

সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে স্বয়ং “সাম্রাজ্যবাদ” -কে অবৈধ প্রমাণকারী শহীদ ম্যালকম এক্স এর একান্ত সহচর মোহাম্মদ আলী ক্লে -এর ৭ম মৃত্যু বার্ষিকী আজ।

গত শতাব্দীতে সাম্রাজ্যবাদী শোষণ ও বর্ণবাদী আমেরিকার বিরুদ্ধে বুক চেতিয়ে লড়াই করে গেছেন যারা, মোহাম্মদ আলী ক্লে তাদের অন্যতম একজন। যিনি সমগ্র জীবন জুড়ে মানুষের “মানবিক মর্যাদা” প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নিজেকে উৎসর্গ করে গেছেন।

একজন স্বাধীনচেতা মানুষ হিসেবে আলী তাঁর সাহসিকতার পরিচয় সেই কিশোর বয়সেই দিয়েছেন। যখন রোম অলিম্পিক জয় করে দেশে ফিরেন, সংবাদ কর্মীদের প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন-

❝ আমার এই সাফল্যে আমি আনন্দিত! তবে মার্কিন পতাকার প্রতিনিধিত্ব করার ফলে নয়। এই দেশ আমার সাথে কখনোই মানবিক আচরণ করেনি। নিশ্চয়ই আমার মূল ভিন্ন, ভিন্ন দেশ। হয়তো আফ্রিকার কোন এক অঞ্চল থেকে ওরা আমায় জোর করে এনেছিল, মানবিক মর্যাদা দিতে নয়! ❞

এরপর, ম্যালকম এক্স এর মাধ্যমে ইসলামে দীক্ষিত হওয়ার পর থেকেই পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছুটি বেড়িয়েছেন মুহাম্মদ আলী। মুসলিম উম্মাহর মহান মুজাহিদগণের সংস্পর্শ পেয়েছেন, ইসলামের বিশ্বজনীনতা ও সামগ্রিকতাকে উপলব্ধি করার চেষ্টা করেছেন।

একইসাথে, পৃথিবীর কাছে অলিম্পিক বিজয়ী বিখ্যাত বক্সার খ্যাত মোহাম্মদ আলী নিজে তাঁর জ্ঞানতাত্বিক গুরু ও আধ্যাত্মিক উস্তাজ হিসেবে উম্মাহর মহান মুজাহিদ শহীদ আলহাজ মালিক আশ শাবাজ তথা ম্যালকম এক্সকে অকপটে গ্রহণ করেছেন। ম্যালকম এক্স এর সাথে তাঁর দীর্ঘদিনের পথচলা, শীর্ষত্ব গ্রহণ ও আন্দলোনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পরবর্তীতে মোহাম্মদ আলী গত শতাব্দীর অন্যতম আরেক পুরোধা ব্যক্তিত্ব ও নতুন এক আদিল দুনিয়ার প্রস্তাবক মুজাহিদ নাজমুদ্দিন এরবাকান ও মহান আলেম উস্তাজ ইউসুফ আল কারজাভির ছাত্রত্বও গ্রহণ করেন৷

ঠিক এভাবেই একটি দীর্ঘ সংগ্রামমুখর জীবন অতিবাহিত করার পর জীবন সায়াহ্নে মোহাম্মদ আলী বলেন-

❝ আমি আমার যেসকল শিক্ষকদের বদৌলতে মোহাম্মাদ আলী হয়েছি, তাঁরা আমায় শিখিয়েছে-

জীবন কোন সরল রেখা নয়, সংগ্রাম-ই জীবনকে অর্থবহ করে তোলে। জীবন হলো- মানুষের মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য আমৃত্যু সংগ্রাম করে যাওয়ার নাম। ইসলামও আমাকে এটিই শেখায়। ❞

আজ এই মহান ব্যক্তিত্বের ৭ম মৃত্যু বার্ষিকী। বিশেষ এই দিনে মোহাম্মদ আলীর রূহের প্রতি রইলো স্বশ্রদ্ধ সালাম…