অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সন্ত্রাসী ইজরায়েলের ভয়াবহ গণহত্যা চলছে প্রায় দুই বছর ধরে। এই সময়ে অঞ্চলটিতে ৫৯ হাজারের বেশী মানুষকে হত্যা করে শতাব্দির সবচেয়ে জঘন্যতম গণহত্যাকারী হিসেবে সাব্যস্ত হয়েছে জায়নবাদী ইজরায়েল। আন্তর্জাতিক সকল আইনকে অবমাননার পাশাপাশি বিশ্বব্যবস্থার সকল প্রকার দৈন্যতাকেও স্পষ্ট করে তুলেছে দখলদার দেশটি।
সম্প্রতি নেতানিয়াহু প্রশাসনের অন্য এক ঘৃণ্য হত্যা-কৌশল প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। সেটি হলো- ক্ষুধা। গাজা জুড়ে শুরু হয়ে গেছে দুর্ভিক্ষ। গতকাল (২৩ জুলাই’২৫) খান ইউনুসে আবু সালেহ নামক এক ফিলিস্তিনি দীর্ঘ অনাহারের পর তার কঙ্কালসার দেহ নিয়ে মৃত্যুবরণ করে। পরবর্তীতে গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে দুর্ভিক্ষের তীব্র আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে জানায়,
উপত্যকাটিতে ইতোমধ্যে অনাহার ও তীব্র ক্ষুধার যন্ত্রণায় মারা গিয়েছে ১২০ জন। যার মধ্যে ৮০জনই শিশু ও নবজাতক।
এরই প্রেক্ষিতে হামাস এক অফিশিয়াল বিবৃতে আরব ও মুসলিম উম্মাহর প্রতি “ঐতিহাসিক অবস্থান” গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। এদিন তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশিত এই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়-
“ইজরায়েলের পাঁচ মাসের সম্পূর্ণ অবরোধের কারণে গাজায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ শুরু হয়ে গেছে । আমাদের শিশুরা না খেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ছে।”
বিবৃতিতে হামাস নিশ্চিত করে, অপুষ্টি ও তীব্র ক্ষুধার যন্ত্রণায় ৮০ শিশুসহ ১০০ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। ত্রাণ সংগ্রহের সময়ও ইজরায়েল হত্যা করেছে ১০০০ জনকে। এটি শুধুমাত্র গত চার থেকে ছয় মাসের পরিসংখ্যান, শেষ তিন মাসে যার তীব্রতা সবচেয়ে বেশী।
ফলে মুসলিম উম্মাহর নিরবতাকে ইঙ্গিত করে উল্লেখ করা হয়,
মুসলিম উম্মাহ ও আরব নেতাদের কুচ্ছিত নিরবতা রক্তাক্ত গাজাবাসীকে হতাশ করেছে ও খুনী নেতানিহুকে উৎসাহিত করেছে। যাতে সে আমাদের শিশু ও নারীদের হত্যা করতে পারে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়,
রাফাহ সীমান্তে অসংখ্য খাদ্যবাহী যান অপেক্ষমান। অথচ দুইশকোটি মুসলিম মিলে মিশরীয় সীমান্ত খুলে দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে আমাদের শিশুরা দীর্ঘ উনিশ দিন অনাহারে থেকেও মৃত্যুবরণ করে।
সেই সাথে বলা হয়, গত নভেম্বরে রিয়াদে অনুষ্ঠিত মুসলিম দেশগুলোর শীর্ষ সম্মেলন আবর্জনার ভাগাড়ে নিপতিত হয়েছে। এই ব্যর্থতা মোচন করে এখন একটি “ঐতিহাসিক অবস্থান” গ্রহণ করুন।
-মুসলিম পোর্ট