মুসলিম পোর্ট

কখনোও কি ভেবে দেখেছেন যে এই পৃথিবীটা কেন এমন অরাজকতার স্বীকার? কখনোও প্রশ্ন করেছেন কারা এই পৃথিবীর মূল নেতৃত্বে রয়েছে? কারা পৃথিবীকে বিশেষ করে মুসলিম অঞ্চল গুলোকে এমন একটা শৃঙ্খলেআবব্ধ করে রেখেছে? কারা এই গোটা বিশ্বে সবসময়ই অস্থির পরিবেশ, যুদ্ধ-বিগ্রহ, সৃষ্টি করে রেখেছে?

চলুন আজকে একটু এই বিষয়ে আলোচনা করা যাক,

আমি যদি আপনাদেরকে বলি যে এই পৃথিবীতে যা কিছুই আছে তা মূলত ৩ টি কোম্পানি দ্বারা পরিচালিত তাহলে কি বিষয়টা অদ্ভুত লাগবেনা? অবশ্যই লাগবে যে এটা কিভাবে সম্ভব? কিন্তু হ্যাঁ এটাই সত্যি যে এই পৃথিবীর সবকিছুই মূলত ৩ টি বিনিয়োগকারী কোম্পানির অধীনস্থ।

কোম্পানি তিনটি হলোঃ

১। ভ্যানগার্ড গ্রুপ ( Vanguard Gruop)

২। ব্ল্যাকরক গ্রুপ ( Blackrock Group)

৩। স্ট্যাট স্ট্রিট  ( State Street Corporation)

মূলত এই তিনটি কোম্পানি গোটা পৃথিবীর অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করছে। অর্থাৎ গোটা পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।

এখন এই কোম্পানি গুলোর ব্যাপারে একটু ধারণা দেওয়া যাক।

যেমন আমরা যদি গুগলের মোট সম্পত্তির মেজর শেয়ারহোল্ডারস দেখতে চাই সেখানে দেখি যে গুগলের ৬১.৮৪% শেয়ারহোল্ডারস বিভিন্ন ইন্সটিটিউশনের যার ৪১১.৯২ মিলিয়ন রয়েছে শুধুমাত্র ভ্যানগার্ড গ্রুপের, ৩৫৫.৩৭ মিলিয়ন রয়েছে ব্ল্যাকরকের এবং ১৯০.৭৬ মিলিয়ন শেয়ার রয়েছে স্ট্যাট স্ট্রিট কর্পোরেশনের অধীনে।

এরপর যদি কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম অর্থাৎ মাইক্রোসফট এর কথা বলি সেখানেও আমরা দেখতে পাই যে, মাইক্রোসফটের মোট সম্পত্তির ৭৩.৭৮% বিভিন্ন ইন্সটিটিউশনের যার মধ্যে ভ্যানগার্ড গ্রুপের হলো মোট শেয়ারের ৮.৮% অর্থাৎ ৬৬৭.৯৯ মিলিয়ন, ব্ল্যাকরক গ্রুপের ৭.১% অর্থাৎ ৫৪৬.২ মিলিয়ন এবং স্ট্যাট স্ট্রিট কর্পোরেশনের ৫.১% অর্থাৎ ৩০০.৩৫ মিলিয়ন।

এরকম করে মেটা, আমাজন, কোকাকোলা, পেপসি, নাইক, প্রাইম ভিডিও, নেটফ্লিক্স থেকে শুরু করে কাপড় তৈরির জন্য ব্যবহৃত সুতোর কোম্পানি (TJX-পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সুতা উৎপাদনকারী কোম্পানি) তাদের অধীনে রয়েছে। এমনভাবে তুলা উৎপাদনকারী কোম্পানি মনসানটো (Monsanto), ঔষধ উৎপাদনকারী বায়ারের (Bayer), মতো পৃথিবীতে যতগুলো কোম্পানি রয়েছে তার প্রতিটি মালিকানার মূল অংশই থাকে এই তিনটি কোম্পানির হাতে।

এই তিনটি কোম্পানিই আমেরিকার সবচেয়ে বড় প্রায় ৫০০টি কোম্পানির প্রায় ৮০% শেয়ারহোল্ডারস। এই ৫০০ টি কোম্পানিতে অন্তত ২৩ মিলিয়ন মানুষ নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। শুধুমাত্র এই তিনটি কোম্পানিই ২৭ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থাৎ টাকার অঙ্কে যা প্রায় ৩১৬,৯৪৩,৬৩০,৮৫৬,৩৭২.২৫৮ কোটি টাকার অর্থ নিয়ন্ত্রণ করছে। যেখানে গোটা পৃথিবীর অর্থনীতি হলো ৮৯ ট্রিলিয়ন ডলার সেখানে এই তিনটি কোম্পানিই প্রায় ৩০% অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে।

কোম্পানিগুলোর কাজ কি?

এক্ষেত্রে প্রথমে আমাদেরকে বুঝতে হবে যে এই তিনটি কোম্পানির কোনটিই ব্যাংক নয় বা ব্যাংকিং কোন সিস্টেমও নয়। এগুলো মূলত ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি বা বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। (ব্যাংক এবং বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে যেমন ব্যাংক জনগণের টাকাকে নিয়ন্ত্রণ করে কিন্তু বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান কোন ব্যাংক কোথায় বিনিয়োগ করবে, কোনটা লাভ বা লস প্রজেক্ট সেটি নিয়ন্ত্রণ করে অর্থাৎ বিনিয়োগ সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করে।) এই কোম্পানি গুলো কখনোই সামনে আসেনা কিন্তু বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সকল প্রকার সিদ্ধান্ত মূলত এই সকল কোম্পানি গুলোই নিয়ে থাকে। মূলত এরা ঘুরেফিরে একই। কেননা আমরা যদি ব্ল্যাকরক গ্রুপের শেয়ারহোল্ডারস কে দেখি তাহলে সেখানেও মোটা একটা অংশ ভ্যানগার্ড গ্রুপের হাতে রয়েছে। তারা একই একে অপরকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে অর্থাৎ সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে থাকে।

এখন আমাদের মনে একটি প্রশ্ন অবশ্যই আসবে যে তাহলে এই তিন কোম্পানির মালিক কে?

চলুন উত্তর জেনে আসা যাক।

এই কোম্পানি গুলোর আসল মালিককে কখনোই সামনে আনা হয় না বা কোথাও তাদের আসল মালিকের নামও খুঁজে পাওয়া যায় না। অক্সফাম (Oxfam International) এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী শুধুমাত্র এই তিন কোম্পানির নিকটি ৪.৬ বিলিয়ন অর্থাৎ ৪৬০ কোটি মানুষের অর্থের চেয়েও বেশি পরিমাণ অর্থ রয়েছে। মূলত রথসচাইল্ড ফ্যামিলি (Rothschild family), রকফ্যালার ফ্যামিলি (Rockefeller Family), ক্লিন্টন, এবং বোশ ফ্যামিলি ( Bosh Family) এই কোম্পানির মালিকদের মধ্যে অন্যতম। অর্থাৎ এই কয়েকটি পরিবার মিলেই শত বছর ধরে গোটা পৃথিবীর লাগাম ধরে রেখেছে। এক্ষেত্রে তারা সবচেয়ে বড় মাধ্যম হিসেবে মিডিয়া সেক্টরকে বেছে নিয়েছে। অর্থাৎ তারা মিডিয়ার মাধ্যমে যা আমাদেরকে যতটুকু জানাতে চায় আমরা ঠিক ততটুকুই জানতে পারি তার বেশি নয়।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে যে তাহলে মিডিয়াকে তারা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করে?

এক্ষেত্রেও কাজ মূলত হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানিই করে থাকে। যেমন শুধুমাত্র পাঁচটি কোম্পানিই গোটা আমেরিকার ৯৫% মিডিয়া গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। সেই কোম্পানি গুলো হলোঃ

১। ViacomCBS-ঃ  এটি মূলত (Paramount Network, CBS Home Entertainment, Paramount Animation, Paramount Pictures, Comedy Central, MTV, Nickelodeon, Paramount Media Networks, BET, CBS Eye Animation Productions, Miramax, Paramount Players, Big Ticket Entertainmen, CBS, CBS Media Ventures, CBS Records, CMT, DreamWorks Picture, Logo, Paramount Consumer Products, TIS Productions, Paramount Vantage, Paws- Inc, Rainbow) এই সকল মিডিয়া গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

২। Time Warner-ঃ এই কোম্পানি ( Turner Entertainment, Warner Bros, Theatre Ventures, Time Inc, TNT, truTV, Warner TV, AT&T SportsNet, Cartoon Network, Cinemax, CNN, DC Studios, Flagship Entertainment, HBO, Monolith Productions, TBS, Time Warner Cable, Turner Broadcasting System, Turner Classic Movies, WaterTower Music, Wolper Organization, AOL, Avalanche Software, Boomerang, Turner Japan) এইসকল মিডিয়া গুলো নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

৩। News Corporation-ঃ নিউজ কর্পোরেশনের অধীনে (Foxtel, Dow Jones Newswires, Fox Cricket, News of the World, Tablelands Advertiser, The Australian, Innisfail Advocate, Bowen Independent, Burdekin Advocate, North Shore Times, City North News, Comment news, Herbert River Express, HarperCollins, Herald Sun, New York Post, The Northern Miner, Sky News Weather Channel, Storyful, Tablelander, The Courier-Mail, The daily Telegraph, Adelaide Matters, Big League) এই সকল মিডিয়া গুলো কাজ করে থাকে।

৪। Walt Disney-ঃ এই কোম্পানি ( Marvel Games, Disney Music Group, 20th Television, Disney Store, ESPN, 20th Century Studios, Club Disney, Disney Channel, Disney Interactive, Disney Junior, Disney Consumer Products, Disney Television Studios, Marvel Entertainment, National Geographic Partners, Pixar, The Walt Disney Company (Southeast Asia) Pte. Ltd, 20th Digital Studio, ESPN on ABC, Asset, Babble, Baby Einstein, Blip.tv, Disney Studio Services) উল্লেখিত মিডিয়া গুলোর নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

৫।Comcast-ঃ  কমক্যাস্টের অধীনে (Xumo, Universal Orlando Resort, AT&T, DreamWorks Animation, A+E Networks, Effectv, Focus Features, NBC Sports, Oxygen, Telemundo, Universal Pictures, Bravo, Carnival Films, Comcast SportsNet, Cox Communication, Disney, Fandango, G4, Comcast Corp, NBCUniversal, Charter, Multimedia Entertainment, Spectra, Comcast Ventures) এই সকল মিডিয়া গুলো কাজ করে থাকে।

আমরা যদিও মনে করে থাকি যে ব্রিটেনের মিডিয়া হয়তো স্বাধীন ভাবে তাদের নিউজ সম্প্রচার করে থাকে কিন্তু এটি একদমই ভুল ধারণা কেননা ব্রিটেনে মাত্র ২ টি কোম্পানি (Daily Mail, এবং News Port) গোটা মিডিয়ার প্রায় ৮৫% নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। যেমন আমরা জানি BBC হলো ব্রিটেনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কিন্তু সেখানে সবচেয়ে বেশি ডোনেশন আসে “The Bill & Melinda Gates Foundation” থেকে।

 একইভাবে ফ্রান্সের ক্ষেত্রেও মাত্র ৪০ জন বিলিয়নিয়ার গোটা ফ্রান্সের মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

অর্থাৎ তারা মিডিয়ার মাধ্যমে শুধুমাত্র কয়েকটি দেশ নয় বরং গোটা পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ করছে।

এখন একটা প্রশ্ন থেকে যায় যে,

যদিও গ্রুপ বা কোম্পানিগুলো কয়েকজন ব্যক্তি কর্তৃক পরিচালিত হয় কিন্তু সাংবাদিকদেরকে তারা কিভাবে পরিচালনা করে বা তারা কিভাবে কাজ করে?

এক্ষেত্রে আমরা সবাই হয়তো “European Journalism Centre” সম্পর্কে জানি, এটাও হয়তো জানি যে এখানে মূলত সাংবাদিকদের বিনামূল্যে ট্রেনিং দেওয়া হয়। কিন্তু এটা আমাদের জানা নেই যে এখানে কারা অর্থ ডোনেশন করে।

যদি আমরা এই প্রতিষ্ঠানটি আর্থিক সাহায্যকারীদের দেখতে চাই তাহলে আমরা এখানেও The Bill & Melinda Gates Foundation, ফেইসবুক, গুগলকে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে দেখতে পাই।

অর্থাৎ এই সকল ফাউন্ডেশন এবং প্রতিষ্ঠান গুলো অর্থ ডোনেট করে সাংবাদিকরা যেন তাদের করায়ত্বের বাহিরে চলে না যায় সেইভাবে নিজেদের মতো করে ট্রেনিং দিয়ে থাকে।

অর্থাৎ আমরা খবরে যা দেখি বা শুনে থাকি এইগুলো প্রতিটি খবরই তাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে অর্থাৎ তারা যা চায় বা যেভাবে চায় সেভাবেই আমরা জেনে থাকি।

আরও একটি বিষয় দেখে থাকি যে সাংবাদিকরা সংবাদ পড়ার সময় দেখে দেখে পড়ে থাকে, এই পদ্ধতিটিও একটি সংস্থা থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে যেন কোন সাংবাদিক তাদের তৈরিকৃত স্ক্রিপ্টের বাহিরে কিছু বলতে না পারে।

এই পদ্ধতিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য শুধু মিডিয়া নয় বরং ব্যাংকিং সিস্টেমকে তারা সর্বপ্রথম নিয়ন্ত্রণ শুরু করে যেখানে তারা নিজেদের আসল পরিচয়কে ব্যাংকিং সিস্টেমের মাধ্যমে গোপন রেখেছে। আর সেই সিস্টেমের নাম হলো ক্যাপিটালিজম অর্থাৎ পুঁজিবাদ ভিত্তিক অর্থনীতি।

এখানে আরও একটি বিষয় লক্ষণীয় হলো, এই সকল বড় বড় ব্যক্তিরা সবাই ফাউন্ডেশন ( The Bill & Melinda Gates Foundation, Rockefeller Foundation, Clinton Foundation) গঠন করেছে। এটি মূলত তাদের আসল চেহারাকে লুকিয়ে মানুষের সহানুভূতি পাওয়ার একটি প্রচেষ্টা যা শুধুমাত্র ধোকা ব্যতীত আর কিছুই নয়।

যেমন “Bill & Melinda Gates Foundation” বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠপোষক। এখানে অনুদানের মাধ্যমে তারা নিজেদের আসল চেহারাকে লুকিয়ে রেখে পর্দার আড়ালে কাজ করে থাকে। আবার যদি একইভাবে রকফেলার ফাউন্ডেশনের কথা বলি তাহলে দেখা যাচ্ছে এই ফাউন্ডেশন ২০০ বছর ধরে গোটা বিশ্বব্যাপী তেল এবং গ্যাস উৎপাদনের মাধ্যমে পরিবেশ নষ্ট করছে, আবার তারাই “Greenpeace Foundation” গঠন করে জাতির সামনে পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে হাজির হচ্ছে।

অর্থাৎ নিজেদের আসল চেহারাকে এই কথিত ফাউন্ডেশনের আড়ালে লুকিয়ে রেখেছে। অথচ Rockefeller Foundation কে পরিবেশের বন্ধু হিসেবে সবার সামনে উপস্থাপন করা হয়। 

এখন আমরা ইউনিলিবার গ্রুপের কথা বলতে পারি। এই কোম্পানি বোতলজাত থেকে শুরু করে সবধরনের প্লাস্টিক জাতীয় যাবতীয় পণ্য উৎপাদন করে থাকে। শুধু মাত্র ৬ টি দেশে ইউনিলিবার ৭০ মিলিয়ন টন বোতল বা প্লাস্টিক জাতীয় দ্রব্য উৎপাদন করে থাকে অথচ ইউনিলিবার কোম্পানির মূল শেয়ারহোল্ডার হলো (ভ্যানগার্ড গ্রুপ, ব্ল্যাকরক গ্রুপ, স্ট্যাট স্ট্রিট কর্পোরেশন) এই তিন কোম্পানি। অথচ তারাই আবার বিভিন্ন চটকদার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পরিবেশের বন্ধু সাজে।

আরেকটি বিষয় না বললেই নয় তা হলো করোনাকালীন সময়ে একবছরের মধ্যে শ্রমিকদের যেখানে ৩.৭ ট্রিলিয়ন ডলার পরিমাণ অর্থ ক্ষতির শিকার হয়েছে সেখানে বিলিয়নিয়াররা ৩.৯ ট্রিলিয়ন ডলার আয় করেছে।

অর্থাৎ যার অর্থ দাঁড়ায় করোনাভাইরাস কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছিলোনা বরং গরীবদের থেকে অর্থকে শোষণ করে বিলিয়নিয়ারদের পকেটে স্থানান্তর করার জন্যই প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে করোনাভাইরাসকে আবিষ্কার করা হয়েছিলো।

তারা যে আমাদেরকে শুধু এইভাবে লুটতরাজ করতেছে, বা শোষণ করতেছে এটুকুই নয় বরং আমরা যেন ভবিষ্যতে কোন পরিকল্পনা করা এগোতে না পারি সেজন্য আমাদের ঋণের জালে আবদ্ধ করছে যে প্রক্রিয়া এখনোও চলমান রয়েছে। ২০২৫ সালে আমেরিকাতে যদি কোন শিশু জন্মগ্রহণ করে তাহলে সে ১লক্ষ ডলার ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে জন্মগ্রহণ করবে। জাপানের ক্ষেত্রে একজন শিশু ১লক্ষ ১০ হাজার ডলার অর্থাৎ প্রায় ১কোটি ১০ লক্ষ টাকা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে জন্মগ্রহণ করবে। তারা যে ঋণের জালে শুধুমাত্র আমাদের আবদ্ধ করছে তাই নয় বরং তারা তাদেরকেও একইসাথে ঋণের জালে আবদ্ধ করছে যেন কখনোই এই সিস্টেমের পরিবর্তন না হয়। অর্থাৎ তাদের বিরুদ্ধে যেন তারাও মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। একইসাথে তারা আমাদের বর্তমান, ভবিষ্যত, আমাদের চিন্তা, দর্শন, রাজনীতি, অর্থনীতিসহ সবকিছুকেই এই পন্থার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করছে। 

অর্থাৎ পৃথিবীতে আমি, আপনি যা কিছুই করতে চাইনা কেন তারা আমাদেরকে সবদিক থেকে আবদ্ধ করে রেখেছে। তারা এমনভাবে আমাদেরকে ঘিরে ধরেছে চাইলেও সেই বেষ্টনীর বাইরে বের হওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। এটাই হলো মানবতার বুলি আওড়ানোর পাশ্চাত্যের তৈরি রাষ্ট্রব্যবস্থা, অর্থনৈতিক সিস্টেম অর্থাৎ পাশ্চাত্য সভ্যতার ওয়াদাকৃত জান্নাত।

তবে আমরা যদি চেষ্টা করি, নিজেদেরকে তাদের থেকেও যোগ্য করে গড়ে তুলি, যুগের সকল প্রকার চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করার সৎসাহস বুকে নিয়ে পথ চলতে পারি, নিয়মিত কাজ করে যেতে পারি তাহলে অবশ্যই তাদের এই তথাকথিত জান্নাত তথা রাষ্ট্রব্যবস্থার বিপরীতে নতুন একটি সিস্টেমকে দাঁড় করাতে পারবো বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। কেননা এটা মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীনের ওয়াদা ।

অবশ্যই অবশ্যই এই রাষ্ট্রব্যবস্থার বিপরীতে নতুন একটি বসবাসযোগ্য দুনিয়া বিনির্মাণ হবেই হবে ইনশাআল্লাহ।

সংকলণ- আব্দুল্লাহ আল মুঈন