মুসলিম পোর্ট

গাযা বাসীর এমন ত্যাগ মানব ইতিহাসে বিরল এবং আগামীর ইতিহাসের জন্য শ্রেষ্ঠ নজরানা।

কুদস তথা মসজিদে আকসাকে রক্ষা তো তাদের একক দায়িত্ব নয়, কিন্তু সমগ্র উম্মাহর দায়ভার তাদেরকে এককভাবে সামাল দিতে হচ্ছে, তারা দিচ্ছেও। আশেপাশের এত মুসলিম দেশ ও জনগণ থাকতেও এ কুদসের জন্য অকাতরে নিজেদের বিলিয়ে দিচ্ছে একমাত্র গাযার বীর উম্মতেরা।

গাযায় আন্দোলনকারী উম্মাহর সাহসী যুবকদের একাংশ

এ মুহূর্তে উম্মতের প্রতিরোধ আন্দোলন কেন আক্রমণ করলো– এ প্রশ্ন অনেকেই করছি! এক্ষেত্রে আমাদের জানা থাকা উচিৎ, এ প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতৃত্ব অত্যন্ত দূরদর্শী। তাদের মূল লক্ষ্য ছিলো–

১) আমরা এমনিতেই ৭০ বছর যাবত দখলদারদের হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছি, সুতরাং এভাবে আর নয়! আর বেঘোরে মৃত্যু নয়, আমরা চাই সম্মানজনক জান্নাতী মৃত্যু।

২) আমরা বুঝিয়ে দিতে চাই, হে যায়নবাদী দখলদারেরা! তোমরা নিরাপদ নও! ফিরে যাও তোমাদের নিজেদের অঞ্চল ইউরোপ কিংবা আমেরিকায়। (বিশাল সংখ্যক ই জ রা য়ে লি সত্যিই পালাতে চাচ্ছে এখন এবং প্রথম ৮ ঘন্টার অভিযানে গা যার চেয়ে চারগুন বেশি ভূমি শত্রু মুক্ত করতে পেরেছিলো এ অপারেশনের যোদ্ধারা।)

৩) যেভাবে দখলদার যায়নবাদীদের দখলকে নরমালাইজ করা হচ্ছিলো, তার প্রতিবাদেই এ নয়া সংগ্রাম। এ প্রকাশ্য বিশ্বাসঘাতকতা এখন আরো বিলম্বিত হবে। কারন তুফান আল আকসার সমর্থনে সে সকল দেশের অপামর জনতা রাস্তায় নেমে এসেছে।

৪) আমাদেরও শক্তি আছে, দেখে নিও। এবং সকল দিক থেকে তোমাদের দখলকৃত অঞ্চলে আক্রমণ চালাতে আমরা সক্ষম এবং উড়িয়ে দিতেও পারদর্শী। আমরা ধাপে ধাপে সামরিক ও রাজনৈতিক শক্তির বহি:প্রকাশ করছি। (আজকের এক বিবৃতিতে কাসসাম ব্রিগেড ঘোষনা দেন, “এখন আমাদের প্রতিশোধ নেবার পালা।”)

৫) সাবেক প্রধান খালিদ মিশালের ভাষায়, কোনো কিছুই বৃহৎ ত্যাগ ছাড়া অর্জিত হয় না। আর সেখানে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও যায়নবাদী শোষণের কেন্দ্রস্থলকে মুক্ত করে মানবতার মুক্তি তরান্বিত করতে প্রয়োজন অনেক অনেক ত্যাগ ও কোরবানীর। আমরা অকাতরে সেটিই করে যাচ্ছি।

অপারেশন আলআক্বসা তুফানে নিযুক্ত হামাস সেনা

হে সত্যিইকারের বীর উম্মতেরা! আমাদের জীবদ্দশায়-ই আমরা তোমাদের এই নজরানা দেখে যাচ্ছি। এবং এতকিছুর পরে মুসলিম দেশগুলোর নীরবতায় এটিও উপলব্ধি করছি যে, উস্তাজ এরবাকান কেন বারবার এ যায়নবাদের ভয়াবহতার ব্যাপারে আমাদের সতর্ক করেছেন ও মুক্তি আন্দোলনের জন্য আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছেন, কেন ইসলামী ইউনিয়ন ও ডি-৮ কে শ্রেষ্ঠ মিরাস হিসেবে রেখে গিয়েছেন!

ইসলামীক ইউনিয়নের সূতিকাগার ডি-৮ এর প্রতিষ্ঠাকালীন দেশ ও নেতৃত্ববৃন্দ

তাই আবারও বলছি, গা যা বাসীর এমন ত্যাগ মানব ইতিহাসে বিরল এবং আগামীর ইতিহাসের জন্য শ্রেষ্ঠ নজরানা। তারা জীবন দিয়েই যাচ্ছে, তাদের শিশুরা রক্তের বন্যায় ঢুবে যাচ্ছে, তাদের সব ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, তবুও তারা অনড়; কারণ একটিই, আর তা হলো ‘সকল নবীর মিলনমেলা ও উম্মাহর অনন্য প্রতীক প্রথম কেবলা বায়তুল মাকদিস এর মুক্তি’।

লেখক- হাসান আল ফিরদাউস